ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিনসহ আ. লীগের তালিকায় বিতর্কিত ১২ জন

কালের কণ্ঠ ::

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এ পর্যন্ত অন্তত ১২ জন বিতর্কিত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রথম ধাপে ৮৭ এবং দ্বিতীয় ধাপে ১২২ উপজেলায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। ওই তালিকা ধরে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ত্রাস, মাদক কারবার, চোরাচালানের অভিযোগ থাকা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কয়েকজন আছেন তালিকায়। আছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয়ও।

চকরিয়ার প্রার্থী বন উজাড়ের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত : কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে ছোটন কান্তি নাথ জানান, চকরিয়ায় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। এ নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ফাঁসিয়াখালী বন বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড় করে ইটভাটা স্থাপন এবং সামাজিক বন উজাড় করার ঘটনায় বন বিভাগের করা মামলায় আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন গিয়াসকে। স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নির্যাতন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কক্সবাজার জেলা শাখার সহসভাপতি লক্ষ্মণ কান্তি দাশকে মারধর, তাঁর একটি এক্সকাভেটর পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

লক্ষ্মণ কান্তি দাশ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাতামুহুরী নদীতীর লাগোয়া আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। সেখানে প্রতি বর্ষায় ব্যাপক পলিমাটি ও বালি এসে ভরাট হয়ে যায়। এ কারণে ফসল আবাদ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই পৈতৃক জায়গা থেকে মাটি অপসারণ করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য কিস্তিতে একটি এক্সকাভেটর ক্রয় করি। কিন্তু পূর্ববিরোধের জের ধরে গিয়াস উদ্দিন রাতের আঁধারে সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিয়ে আমার ওপর আক্রমণ চালান। এতে আমি গুরুতর আহত হই। ওই সময় তিনি আমার এক্সকাভেটরে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। এ নিয়ে তখন থানায় মামলা পর্যন্ত করতে পারিনি আমি। পরে আদালতের দ্বারস্থ হই। সেই মামলার তদন্ত এখনো এগোয়নি।’ তিনি বলেন, ‘গিয়াস আমার পৈতৃক বাড়ির চারিদিকের মাটি কেটে নিয়ে পুকুর তৈরি করে ফেলে। এ কারণে ওই বাড়িতে কেউ বসবাস করতে পারছি না।’

ফাঁসিয়াখালী বন রেঞ্জের উচিতারবিল সামাজিক বনায়নের আগর বাগান সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০০ জন উপকারভোগী নির্বাচিত করে ৫০ হেক্টর বনভূমিতে আগর বাগান সৃজনপূর্বক সামাজিক বনায়নের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন সেই আগর বাগানের এক লাখ গাছ কেটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে স্থাপিত ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেন এবং বরাদ্দকৃত বনভূমি দখলে নেন। এ নিয়ে গিয়াস উদ্দিন ও তাঁর চার ভাইসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা হলেও সেই মামলা ক্ষমতার প্রভাবে হিমাগারে রয়েছে।’

ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জে একসময় দায়িত্ব পালনকারী সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) ও বর্তমান ডিএফও মো. মাসুদ রানা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ছিল ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের উচিতারবিল মৌজায় একটি হাতির অভয়ারণ্য তৈরির। এ জন্য তৎসময় অনেক দূর এগিয়ে যায় অভয়ারণ্য তৈরির কাজ। কিন্তু তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন সংরক্ষিত বনাঞ্চল ধ্বংস করে অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করায় তা ভেস্তে যায়। এমনকি সেই অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গেলে বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপরও আক্রমণ চালায় গিয়াস উদ্দিনের লোকজন। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে আদালতে মামলা করি এবং সেই মামলায় আদালত তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানারা আদেশ দেন।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দলের বিভিন্ন সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীরা হয়তো কারো ইন্ধনে এবং উসকানিতে আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনছে। তবে আমি এত বছরের রাজনীতিতে কারো কাছ থেকে এক টাকাও চাঁদাবাজি করিনি। অন্য যেসব অভিযোগ সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। এ কারণেই সব কিছু যাচাই-বাছাই করে দল আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছে।’

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত রিয়াজ উদ্দিনের (বর্তমান চেয়ারম্যান) বিরুদ্ধে সোনা চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গত মেয়াদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকাকালেই তিনি চোরাচালান মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টনে এক বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ বস্তা দেশি-বিদেশি মুদ্রা এবং ৫২৮টি সোনার বার উদ্ধার করেছিলেন শুল্ক গোয়েন্দারা। ওই সময় আটক করা হয়েছিল বাসার মালিক এস কে মোহাম্মদ আলীকে। এসংক্রান্ত মামলায় বলা হয়, সোনা চোরাচালানে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজও জড়িত। পরে রিয়াজ গ্রেপ্তার হন। জানা গেছে, ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনের কিছুদিন আগে রিয়াজ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি অর্থের জোরে বারবার দলের মনোনয়ন বাগিয়ে নেওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের পুরনো নেতাদের একটি বড় অংশ ক্ষুব্ধ।

এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে রিয়াজ উদ্দিনের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। গতকাল বুধবার এসএমএস পাঠিয়েও তাঁর কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান। তিনি সরকারি চাকরিতে থেকেও বিধিভঙ্গ করে দলীয় পদে ছিলেন। সরকারি কর্মচারী হিসেবে গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে পোলিং অফিসারের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ১০ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আছে। অথচ নদীভাঙনকবলিত এলাকার সন্তান খলিলুর রহমান উত্তরাধিকার সূত্রে তেমন কোনো সম্পদ পাননি। তাঁর ভাইদের মধ্যে একজন চায়ের দোকান চালান, একজন কৃষিকাজ করেন, আরেকজন গার্মেন্টে চাকরি করেন। খলিলুর রহমান গত ডিসেম্বর পর্যন্ত উপজেলার চর আদিত্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তাঁর স্ত্রীও স্কুলশিক্ষক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলশিক্ষক হয়েও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে গত দশ বছরে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বানিয়েছেন খলিলুর। সিরাজগঞ্জ শহরের দত্তবাড়ী এলাকায় নিজের ও স্ত্রীর নামে প্রায় সাড়ে ৫ শতক জমির ওপর পাঁচতলা ভবন গড়েছেন। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মানিকদিঘা মৌজায় ২০১৪ সালে নিজ নামে ১৯ শতক জমি কিনেছেন। ওই জমি কেনার সময় নিজের শিক্ষক পরিচয় লুকিয়ে পেশা উল্লেখ করেন ব্যবসা। খলিলুর রহমান একটি টয়োটা করোল্লা (ঢাকা মেট্রো গ-১৯০৩০৪) গাড়ি ব্যবহার করেন।

এলাকাবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর পাঠানো এক অভিযোগপত্রে বলা হয়, খলিলুর রহমানের সোনালী ব্যাংক কাজীপুর শাখায় ৫০ লাখ টাকার এফডিআর আছে, যার হিসাব নম্বর ৭৩৬৭৪। এ ছাড়া ঢাকার মিরপুরে, গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে, বগুড়া শহরের লতিফপুর এলাকায় তাঁর ফ্ল্যাট ও জমি আছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে খলিলুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর আগেই সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগপত্র দিয়েছিলাম, কিন্তু সেটা এত দিনেও গ্রহণ হয়নি। গত ৩১ ডিসেম্বর তা গ্রহণ হয়েছে।’ নিজের সম্পদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আগে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। মাঝখানে সরকারি চাকরির কারণে তা করিনি। এখন আবার ঠিকাদারিতে যুক্ত হয়েছি।’

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় মনোনয়ন পেয়েছেন জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাসের অভিযোগ রয়েছে। আছে জৈন্তাপুরে ‘বোমা মেশিন’ দিয়ে পাথর কেটে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করারও অভিযোগ। জানা যায়, গত ৩ ডিসেম্বর জৈন্তাপুরে খুন হন প্রবাসী হোসেন আহমদ। ওই ঘটনায় তাঁর ভাই ৬ ডিসেম্বর থানায় মামলা দায়ের করেন, যার এক নম্বর আসামি হলেন লিয়াকত আলী। মামলার বাদী আমিন আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ৩ ডিসেম্বর আমরা প্রশাসনের সহায়তায় একটি জমি বুঝে নিতে যাই। কিন্তু লিয়াকত আলী তাঁর বিশাল বাহিনী নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। এতে আমার ভাই মারা যান এবং আমরা অনেকেই আহত হই।’

২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুখলিছুর রহমান দৌলা খুন হলে অভিযোগ উঠেছিল লিয়াকত আলীর দিকে। পরে প্রভাব খাটিয়ে তিনি ওই হত্যা মামলা থেকে রেহাই পেলেও তাঁর মামাশ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

দলের স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার সময় হলফনামায় লিয়াকত নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছিলেন ‘অষ্টম শ্রেণি পাস’। একসময় স্থানীয় জলমহালের পাহারাদার ছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাঁর আর্থিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন হয়। নামে-বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক হন তিনি।

লিয়াকত আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে হত্যা মামলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনার দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। কিন্তু আমাকে এক নম্বর আসামি করেছে। আমি আদালত থেকে জামিনে আছি। বাদী এখন তার ভুল বুঝতে পারছে। সে জানে আমি নির্দোষ। ফলে ঘটনাটি এখন আপসের দিকে এগোচ্ছে।’

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় মনোনয়ন পেয়েছেন দুদকের মামলায় তিন মাস কারাগারে থেকে মুক্তি পাওয়া খায়রুল হুদা চপল। তিনি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্মাণের মাত্র দুই বছরের মাথায় বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় সারা দেশে তীব্র সমালোচনা উঠেছিল। সে বছরের ২ জুলাই হাওরের বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছিল দুদক। ওই মামলার আসামিদের মধ্যে অন্যতম খায়রুল হুদা চপল। ওই বছরের ১৫ আগস্ট চপল দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তিন মাস পর জামিনে মুক্তি পান চপল। কয়েক দিন আগে দুদক ওই মামলার অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে। জানা যায়, তাতে আসামি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন চপল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আবদুল লতিফ প্রধান। তিনি মহিমাগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত মোজাম্মেল হক প্রধানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থা। আবদুল লতিফ প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গাইবান্ধার পুলিশ সুপারকে গত ৯ জানুয়ারি একটি চিঠি দেন তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান। চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয় জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে। চিঠিতে আ. লতিফ প্রধানের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, ‘আসামির পক্ষে অবস্থান নিয়ে তিনি নিজে এবং তাঁর কতিপয় সমর্থকের মাধ্যমে প্রকাশ্যে ও গোপনীয়ভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রদানে বিরত থাকার জন্য বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছেন। এ ছাড়া বিভিন্নভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য-উপাত্ত বিনষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থেকে মামলার তদন্তকাজ বাধাগ্রস্ত করছেন।’ চিঠির শেষাংশে লেখা হয়, ‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে আসামিপক্ষের উল্লিখিত ব্যক্তি এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক এই সংস্থাকে অবহিত করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’

মোহনপুরে এমপির ভগ্নিপতি : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পিপি আবদুস সালাম। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনের ভগ্নিপতি। এতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। তাদের মতে, এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে তা একটি পরিবারের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় মনোনয়ন পাওয়া শফিউল আজম চৌধুরীকে নিয়েও বিতর্ক উঠেছে। তিনি পাকেরহাট সরকারি কলেজের প্রভাষক। সরকারি চাকরিতে থেকে কিভাবে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেলেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা উঠেছে।

এ ছাড়া বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় আজিজুল হক, নীলফামারীর জলঢাকায় আনসার আলী, রংপুরের পীরগঞ্জে নূর মোহাম্মদ মণ্ডলকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করায় দলের স্থানীয় অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত কয়েকজনকে দলের মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

দলীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য : মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ‘যুদ্ধাপরাধীর’ আত্মীয় থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এমন অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখব, প্রয়োজনে তাঁদের মনোনয়ন বাতিল করব।’

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে পাকেরহাট কলেজের প্রভাষক শফিউল আজম চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তার পরও কোনো সমস্যা থাকলে আমরা যাচাই করে দেখব।’

 

পাঠকের মতামত: